বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার অন্যতম প্রতীক হলো “জাতীয় সংসদ ভবন” বা পার্লামেন্ট হাউস। স্থাপত্যশৈলীর অনন্য নিদর্শন এই ভবনটি শুধুমাত্র বাংলাদেশেই নয়, বরং পুরো পৃথিবীজুড়ে স্বীকৃত। দেশের সাংস্কৃতিক এবং ঐতিহাসিক ঐশ্বর্যের প্রতীক। জাতীয় সংসদ ভবনটির ডিজাইন এবং নির্মাণকালীন ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে আমরা বুঝতে পারি এর গুরুত্ব কতটা। যদি আপনি বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ ভবন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান, তবে এই পোস্টটি আপনার জন্য উপযুক্ত। এখানে আপনি পাবেন জাতীয় সংসদ ভবন সম্পর্কে সবকিছু, যা আপনাকে নিশ্চিতভাবে মুগ্ধ করবে।”
তৈরীর ইতিহাস
- জাতীয় সংসদ ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা গৃহীত হয় ১৯৫৯ সালে।
- নকশা অনুমোদিত হয় ১৯৬২ সালে।
- নির্মাণ শুরু হয় ১৯৬৪ সালে। যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত স্থপতি লুই কান এর নকশা প্রণয়ন করেন।
- ১৯৬৯ সালে আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনের ফলে কাজ বন্ধ হয়।
- দেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রাদেশিক পরিষদ ভবনে ( বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ) সংসদের কাজ চালু হয় । এবং জাতীয় সংসদ ভবনের অবশিষ্ট কাজ পুনরায় শুরু হয় । ১৯৮২ সালে সংসদ ভবনের নির্মাণ শেষ হয়। ভবনটি নয়টি ব্লকে বিভক্ত, কেন্দ্রীয় ব্লকের নিচে ৩৫৪ আসনের হল রুম রয়েছে যেখানে সংসদ অধিবেশন বসে। মূল ভবনে কোন কলাম নেই, তবে লুই কান ভবনটিকে এমনভাবে নকশা করেন যাতে প্রাকৃতিক আলো এবং বাতাস ভবনের প্রতিটি অংশে পৌঁছায়। ভবনের স্থাপত্যে জ্যামিতিক নকশার প্রাধান্য, এবং পানির সংমিশ্রণ ভবনটিকে একটি আধুনিক সৌন্দর্য্য প্রদান করেছে।
কিভাবে যাবেন
ঢাকার যেকোনো স্থান থেকে সহজেই শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত জাতীয় সংসদ ভবনে পৌঁছানো যায়। ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সংসদ ভবনের দূরত্ব প্রায় ১৫ কিলোমিটার। রিকশা, সিএনজি, বাস বা উবারের মাধ্যমে আপনি সহজেই এখানে পৌঁছাতে পারবেন। ঢাকার অন্যান্য এলাকা থেকেও সরাসরি যাতায়াত ব্যবস্থা রয়েছে।
খরচ
জাতীয় সংসদ ভবনের মূল ভবনে প্রবেশাধিকার সীমিত এবং শুধুমাত্র নির্দিষ্ট অনুমতির মাধ্যমে এটি দর্শন করা যায়। তবে, সংসদ ভবনের চারপাশের পার্ক এবং খোলা স্থানগুলোতে প্রবেশ সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। সেখানে ছবি তোলা এবং ঘুরে বেড়ানোর জন্য কোনো খরচ নেই। এছাড়া, পার্কিং বা অন্যান্য ক্ষুদ্র খরচ সামান্য হতে পারে।
ভ্রমণের উপযুক্ত সময়
ঢাকা শহরের আবহাওয়া বেশ গরম, তাই অক্টোবর থেকে মার্চ মাসের শীতকালীন সময়টি সংসদ ভবন ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত। এই সময় আবহাওয়া আরামদায়ক থাকে, এবং দীর্ঘ সময় ঘোরাফেরা করাও সহজ হয়। বিশেষত সন্ধ্যার দিকে ভবনটি আলোকসজ্জিত হলে এর সৌন্দর্য আরো বেশি চমকপ্রদ হয়ে ওঠে।
আশেপাশের দর্শনীয় স্থান
জাতীয় সংসদ ভবনের আশেপাশে আরো বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান রয়েছে, যেমন-
- জাতীয় শহীদ মিনার: বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলনের স্মারক, যা সংসদ ভবন থেকে খুব কাছেই অবস্থিত।
- বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর: বাংলাদেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রদর্শনী।
- হাতিরঝিল: সন্ধ্যা বেলায় আলোকসজ্জার মাঝে হাতিরঝিলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন।
- রমনা পার্ক: সবুজের সমারোহে ভরা একটি মনোরম পার্ক, যেখানে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।
জরুরী টিপস
- জাতীয় সংসদ ভবনের ভেতরে প্রবেশ করতে হলে পূর্ব থেকে অনুমতি নিতে হবে।
- ভ্রমণের সময় যথাযথ পোশাক পরিধান করুন, বিশেষত ভিতরের অংশ দেখার ক্ষেত্রে।
- সংসদ ভবনের চারপাশে নিরাপত্তারক্ষী থাকেন, তাই নিরাপত্তা বিধি মেনে চলা জরুরি।
- ভালো ক্যামেরা নিতে ভুলবেন না, কারণ ভবনটির স্থাপত্য নিদর্শন খুবই ফটোজেনিক।
- পার্কের স্থানে বসে বিশ্রাম নেওয়ার ব্যবস্থা থাকায় পিকনিকের জন্যও জায়গাটি উপযুক্ত।
উৎসাহমূলক শেষ কথা
বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ ভবন শুধুমাত্র একটি স্থাপত্যিক নিদর্শন নয়, এটি দেশের গর্ব এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীক। এর প্রতিটি ইট, প্রতিটি স্তম্ভে বহন করে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস ও ভবিষ্যতের অঙ্গীকার। তাই সংসদ ভবন ভ্রমণ শুধুমাত্র একটি পর্যটন অভিজ্ঞতা নয়, এটি এক ঐতিহাসিক যাত্রা। নিশ্চয়ই আপনি এই ভ্রমণ থেকে একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি অর্জন করবেন এবং দেশের ঐতিহ্য ও সৌন্দর্যের সাথে নতুনভাবে পরিচিত হবেন।
এটি দেখার মাধ্যমে দেশের গর্বিত স্থাপত্য ইতিহাসকে উপলব্ধি করতে পারবেন, যা আপনাকে নতুন করে অনুপ্রাণিত করবে।
করনীয়:
সময়ের সাথে সাথে তথ্য ও ভাড়ার আংশিক পরিবর্তন হতে পারে তাই যখন ভ্রমণে যাবেন, সেই সময়ের বর্তমান তথ্য ও ভাড়া যাচাই করে ভ্রমণ করুন। অবশেষে, আপনার ভ্রমণকে আরও অর্থবহ করার জন্য সঠিক প্রস্তুতি নিন এবং বাংলাদেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সম্পর্কে জানুন। আপডেট তথ্য পেতে আমার ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে ভুলবেন না।
মনোযোগ আকর্ষণ
দেশের জাতীয় সম্পদ রক্ষা করা আমাদের সবার সম্মিলিত দায়িত্ব। এই সম্পদ শুধু আমাদের বর্তমান প্রজন্মের জন্য নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যও অপরিসীম গুরুত্ব বহন করে। তাই, আমরা এই সম্পদের সঠিক ও যথাযথ ব্যবহারে সচেতন থাকবো। সকলে মিলে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করলে, আমরা আমাদের জাতীয় সম্পদ সুরক্ষিত রাখতে সক্ষম হবো। এবং একটি উন্নত ও সুষম ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে পারব। ধন্যবাদ।
আমার দেওয়া তথ্য যদি কোথাও ভুল থাকে বা যদি আপনার কোনো পরামর্শ থাকে, দয়া করে কমেন্ট করে জানাবেন।
12 Comments
ভ্রমণ সল্যুশন সাইট আমাকে যেকোনও ভ্রমণ পরিকল্পনার সময় সাহায্য করে। এখানকার তথ্যগুলোর সঠিকতা এবং বিশদ বর্ণনা সত্যিই চমৎকার। প্রতিটি স্থান সম্পর্কে টিপস, খরচ, এবং দর্শনীয় স্থানগুলোর ডিটেইলস আমাকে দারুণভাবে সাহায্য করেছে।
ভ্রমণের জন্য একটি আদর্শ সাইট! এমন তথ্যবহুল ব্লগের জন্য লেখক কে অনেক ধন্যবাদ।
জাতীয় সংসদ ভবন বাংলাদেশের স্থাপত্যশৈলীর এক অনন্য নিদর্শন! এর অসাধারণ নকশা ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব সত্যিই মুগ্ধকর। এমন তথ্যবহুল ব্লগের জন্য ধন্যবাদ, এটি আমাদের জাতীয় গৌরবের স্মারক সম্পর্কে আরও জানতে সহায়তা করলো
জাতীয় সংসদ ভবন বাংলাদেশের স্থাপত্যশৈলীর এক অনন্য নিদর্শন! এর অসাধারণ নকশা ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব সত্যিই মুগ্ধকর। ভ্রমণ সল্যুশন সাইট আমাকে যেকোনও ভ্রমণ পরিকল্পনার সময় সাহায্য করে।এটি দেখার মাধ্যমে দেশের গর্বিত স্থাপত্য ইতিহাসকে উপলব্ধি করতে পারবেন, যা সবাইকে নতুন করে অনুপ্রাণিত করবে।
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার অন্যতম প্রতীক হলো “জাতীয় সংসদ ভবন” বা পার্লামেন্ট হাউস। স্থাপত্যশৈলীর অনন্য নিদর্শন এই ভবনটি শুধুমাত্র বাংলাদেশেই নয়, বরং পুরো পৃথিবীজুড়ে স্বীকৃত। দেশের সাংস্কৃতিক এবং ঐতিহাসিক ঐশ্বর্যের প্রতীক।
This is exactly what I was looking for! Your tips are so practical and easy to follow—can’t wait to try them out. Thanks for sharing such valuable information!
স্থাপত্যশৈলীর অনন্য নিদর্শন সংসদ ভবন।এ ভবনটি শুধুমাত্র বাংলাদেশেই নয়, বরং পুরো পৃথিবীজুড়ে স্বীকৃত। দেশের সাংস্কৃতিক এবং ঐতিহাসিক ঐশ্বর্যের প্রতীক।এর অসাধারণ নকশা ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব সত্যিই মুগ্ধকর। এমন তথ্যবহুল ব্লগের জন্য ধন্যবাদ।
আমি জাতীয় সংসদ ভবন ঘুরে এসে মুগ্ধ হয়েছি। এত সুন্দর এবং ঐতিহাসিক স্থাপনা আমাদের দেশের জন্য গর্বের। ওয়েবসাইটটিতে ভবনের ইতিহাস, স্থাপত্য এবং বিভিন্ন আয়োজন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া আছে, যা খুবই উপকারী।
আপনার ভ্রমণ পরামর্শ ও অভিজ্ঞতাগুলো পড়ে ভীষণ ভালো লাগল। ভ্রমণকারীদের জন্য এমন তথ্যসমৃদ্ধ আর্টিকেল খুবই সহায়ক। আশা করি, ভবিষ্যতে আরও এমন পোস্ট শেয়ার করবেন।
জাতীয় সংসদ ভবন বাংলাদেশের স্থাপত্যশৈলীর এক অনন্য নিদর্শন! এর অসাধারণ নকশা ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব সত্যিই মুগ্ধকর। ভ্রমণ সল্যুশন সাইট আমাকে যেকোনও ভ্রমণ পরিকল্পনার সময় সাহায্য করে।এটি দেখার মাধ্যমে দেশের গর্বিত স্থাপত্য ইতিহাসকে উপলব্ধি করতে পারবেন, যা সবাইকে নতুন করে অনুপ্রাণিত করবে।
সংসদ ভবন বাংলাদেশের গণতন্ত্রের প্রতীক, যেখানে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তগুলি গ্রহণ করা হয়। এর আধুনিক স্থাপত্য এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ দর্শকদের মুগ্ধ করে।
আমি জাতীয় সংসদ ভবন ঘুরে এসে মুগ্ধ হয়েছি। এত সুন্দর এবং ঐতিহাসিক স্থাপনা আমাদের দেশের জন্য গর্বের। ওয়েবসাইটটিতে ভবনের ইতিহাস, স্থাপত্য এবং বিভিন্ন আয়োজন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া আছে, যা খুবই উপকারী।